Wednesday, August 12, 2020

জাপান বৃত্তান্ত

 

একটা গল্প বলবো।

গল্পের নায়ক বাংলাদেশী এক যুবক। ২৮ কি ৩০ বছর বয়সী। বাংলাদেশের এক নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

যুবক জাপানে মাস্টার্স করছেন। দিনগুলো খুব ভালোই কাটছিলো যুবকের। কোর্সওয়ার্ক, রিসার্সওয়ার্ক আর গ্রুপ ডিসকাশন।

তারপর জাপানী এক তরুণীর সাথে ভাব জমে যায় সে যুবকের। তার সাথে গ্রুপ ডিসকাশন করতে গেলে সময় দ্রুত চলে যায়, সে কোনো প্রবলেম নিয়ে আসলে শত ব্যস্ততা স্বত্ত্বেও সেটা নিয়ে বেপরোয়া হয়ে যায় যুবক।

একদিন হঠাৎ সেই যুবক আবিষ্কার করে, তিনি সেই বিদেশীনীর প্রেমে পরেছেন। তারপরও ব্যাপারটা কখনো বুঝতে দেয় না। বিদেশ বিভূঁই বলে কথা।

ইউনিভার্সিটি থেকে একটা স্টাডি ট্যুর এর আয়োজন হয়ে যায় ইতোমধ্যে। অসাধারণ একটা জায়গা। তারপর তাপমাত্রা জিরো এর নিচে। যদিও উইন্টারে এখানে এটা খুবই কমন। জিরো এর নিচে সব টেম্পারেচারই সেইম মনে হয়।

হৈ-হুল্লোর, আর পার্টির মাঝে হঠাৎ যুবক খেয়াল করে, সেই রুপবতী তরুণী প্রচন্ড ঠান্ডায় এককোনে গুটিসুটি হয়ে কাঁপছে। যুবক ছুটে চলে যায় মেয়েটির কাছে। তারপর নিজের পরা মাফলারটি খুব যত্ন নিয়ে পরিয়ে দেয় মেয়েটিকে। এরপর খুব লাজুক দৃষ্টিতে তাকায় মেয়েটি। সেই দৃষ্টি তীর ধনুকের মতো আঘাত করে যুবকের বুকে। কি সেই মায়াবতী দৃষ্টি!

যুবকের কাছে স্ট্রিট ল্যাম্পের আবছা আলোটা হঠাৎ জোসনা বলে মনে হয়। সেই আবছা আলোয় অপরুপ সুন্দরী লাগে মেয়েটাকে।  যুবক হঠাৎ একটা ঘোরের মধ্যে পরে যায়। পাশের মানুষ টাকে মানুষরুপী পরী বলে মনে হয়। আর তারপাশে বসে সব থেকে সুখী মনে হয় নিজেকে। আচ্ছা, সময়টাকে ঠিক এই জায়গায় আটকে রাখলে কেমন হতো? মন্দ না।

তারপর অনেকগুলো দিন কেটে যায়। সেই যুবক দেশের একজন সুনামধন্য প্রফেসর এখন। ব্যস্ততার কারনে আর সময়ের ব্যবধানে চেনা সময়কেও অচেনা মনে হয়। 

কোনো কোনো রাতে ঘুম আসতে চায় না তাঁর। তখন চোখ বন্ধ করলেই ওই সময়টায় ফিরে যান তিনি সেই স্ট্রিট ল্যাম্প, সেই গ্রুপ ডিসকাশন, সেই স্টাডি ট্যুর।সেই রঙিন মাফলার, আর মায়াবী সেই দৃষ্টি। আহা সেই দিনগুলিতাঁর ঘুম এসে যায়।

সুখের স্মৃতিগুলো স্বপ্ন হয়ে ধরা দেয়।


No comments:

Post a Comment