( সময়টা ছিল একটু ক্রিটিকাল। HSC exam শেষ করে পরদিনই ঢাকায় এসে হোস্টেল এ উঠেছি।
আমার ছোট্ট একটা ডায়েরি ছিল। মাঝে মাঝে দুই এক লাইন করে লিখতাম। বেশি লিখতাম যখন মন খারাপ থাকতো।বহুদিন পরে হঠাৎ ডায়েরিটা পড়তে গিয়ে মনে পড়ে গেলো আমার ঢাকার হোস্টেল লাইফের সেই দিনগুলো। একই সাথে অনেক আনন্দের ও কষ্টের সংমিশ্রণ ছিল সেই দিনগুলো। )
১৮/০৬/২০১১
ছোট্ট একটা রুম।
আমরা চারজন থাকি। আমি, নয়ন, তৌহিদুল আর তান ভাই। চারজনের চারটা টেবিল মুখোমুখি। চেয়ার রাখার জায়গা নাই। আমাদের বেডটাই আমাদের চেয়ার। রুম অনেক ছোট। আমি আর তৌহিদুল engineering কোচিং করছি OMECA তে। নয়ন আর তান ভাই ভার্সিটি কোচিং করছে UCC তে।
আমাদের হোস্টেলটা পূর্ব রাজাবাজার, ফার্মগেট এ। আমরা কয়েকজন স্কুল ফ্রেন্ড মিলে উঠেছি। আমি, শাকিল, সৈকত, তৌহিদ, নয়ন।
আমি, তৌহিদ, নয়ন রংপুর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে। সৈকত ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল থেকে, শাকিল রংপুর গভঃ কলেজ থেকে।
শাকিল, সৈকত অনেক দায়িত্ববান ছেলে। ওরাই ঢাকার এই হোস্টেলটা ঠিক করেছে।
১৯/০৬/২০১১
আমি অধিকাংশ সময়ই পড়ার চেষ্টা করছি।
নয়ন ফোনে কোন জানি বান্ধবীর সাথে কথা বলছে। নয়নের অনেকগুলা বান্ধবী আছে। কিন্তু একটাও ওর gf না। ওর কোনো gf নাই। নয়ন ওদেরকে খুব কমই ফোন দেয়, ওর বান্ধবীরাই ওকে বেশি ডিস্টার্ব করে। নয়ন ছেলেটা ভাল ছেলে। তবে একটু চঞ্চল টাইপের। আর পড়াশুনা করতে চায় না। ও যেন পড়াশুনা করে আন্টি এ জন্যই ওকে আমার সাথে রেখেছেন।
তৌহিদুল ঘুমাচ্ছে। ছেলেটা সারাদিনই ঘুমায়।
২০/০৬/২০১১
তান ভাই সিগারেট খাচ্ছে। তান ভাইয়ের কাজ দুইটা-
১. সিগারেট খাওয়া
২. গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলা ।
এতদিন হয়ে গেল আমি উনাকে কখনো বই নিয়ে বসতে দেখি নি। উনার কোন বই খাতা নেই। কে বলবে যে উনি admission coaching করছেন? উনার লজিক একটা- “আমার বাপের টাকা আছে তাই আমি প্রাইভেট ভার্সিটি তে পরব। আমার বাপের টাকা দিয়া আমি সিগারেট খাব, তাতে কার কি বলার আছে? ”
তাই উনি সারাদিন খান-দান, ঘুমান, gf এর সাথে কথা বলেন আর বিড়ি খান।
তবে হ্যাঁ, ওনার মনটা অনেক ভাল।
২১/০৬/২০১১
তান ভাই সিগারেটের ধোঁয়াগুলো আমার মুখের কাছে ছাড়ছে। না, আমার তেমন কোন প্রব্লেম হচ্ছে না। মাঝে মাঝে শুধু মাথাটা ঝিম ঝিম করে উঠছে। ঐটা কোন ব্যাপার না। অভ্যাস হয়ে যাবে।
২২/০৬/২০১১
আমি তান ভাইকে সিগারেট এর ব্যাপারে কিছু বলি না। কারন বলে কোন লাভ নাই। উনার বাপের টাকা দিয়া উনি সিগারেট খাবেন, তাতে আমার কি বলার আছে?
উনার বাপের টাকা দিয়া রুম ভাড়া নিয়া আমার সাথে থাকেন তাতেইবা আমার কি বলার আছে? এইতো মাত্র ৪ টা মাস। তারপর তো আর সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ার মতো কেউ থাকবে না। আর উনি তো মানুষ হিসেবে ভাল। প্রব্লেম একটাই- সিগারেট। উনার নাকি রুম এর বাইরে গিয়া সিগারেট খাইতে ভাল লাগে না।
তান ভাইয়ের উপদেশ শুনতে আমার ভালই লাগে। সব উপদেশগুলো অভিজ্ঞতালব্ধ প্রেমভালবাসা সম্পর্কিত। ভবিষ্যতে কাজে দিলেও দিতে পারে।
২৩/০৬/২০১১
নয়ন তবুও তান ভাইকে smoking এর ব্যাপারে বলে। ওর asthma র সমস্যা আছে। তবে বলে কাজ হয় না।
তৌহিদ কিছু বলে না। ওর জ্বর বা মাথাব্যাথা হলে ও নিজেই সিগারেট খায়। ওর নাকি Napa ট্যাবলেট কাজ করে না। সিগারেট খাইলে মাথাব্যাথা ভাল হয়- আগে জানতাম না।
২৪/০৬/২০১১
আমি integration এর অংক করছি। অনেক ফর্মুলা। নতুন কিছু টেকনিক শিখেছি। Integration আমি ভালই পারি।
২৫/০৬/২০১১
পলক ভাইয়া ওনার এক friend কে নিয়ে এসেছিলেন। কিছুক্ষনক গল্প করলেন। ফুচকা খাওয়ালেন। কথা বলে অনেক ভাল লাগলো।
পলক ভাইয়া আমার কাজিন। বুয়েটে পড়েন। আমি ছোট থেকেই আম্মুর মুখে ওনার কথা শুনে আসছি। ভাইয়া বলল কোন সাবজেক্ট এ পড়ার ইচ্ছা? আমি ভাব ধরে বললাম- EEE বা CSE পেলে পড়ব, না পেলে পড়ব না। মনে মনে বললাম, একটা সাবজেক্ট পাইলেই হইলো।
২৬/০৬/২০১১
জামাল ভাইয়া আমার জন্য আনারস নিয়ে এসেছেন। আমার জ্বর শুনে আদ্ভুত ভালো এই মানুষটা মোহাম্মদপুর থেকে ছুটে এসেছেন। উনি বললেন যে কোন সমস্যা হলেই উনাকে ফোন দিতে।
আমি জামাল ভাইয়াকে কোন সমস্যার কথা বললাম না। জামাল ভাইকে কাছে পেয়ে মনে একটা সাহস পেলাম- আমি ঢাকায় একা নই।
২৭/০৬/২০১১
ঢাকায় এসে এই প্রথম জ্বর এসেছে। জ্বরে আমার তেমন কোনো খারাপ লাগছে না। আম্মু আনারস খেতে বলেছে। ফার্মগেটের আনারস ডেইলি খাচ্ছি আর দিব্যি কোচিং করছি।
বুয়েটের ভাইয়াদের দেখতে ভালো লাগে, তাদের কথা শুনতে ভাল লাগে। তাদের নেয়া ক্লাসগুলোও অসাধারন লাগে। এক এক ভাই এক এক রকম। দেখলেই ব্রিলিয়ান্ট মনে হয়।
২৮/০৬/২০১১
ইদানিং আমি ঘুমের মধ্যে স্বপ্নেও ম্যাথ করা শুরু করেছি। স্বপ্নে দেখি কোন ভাই জানি আমাকে শর্টকাট শিখাইতেছেন। মানুষ দিনে যা করে রাতে তাই নাকি স্বপ্ন হিসেবে দেখে।
অনেক গনিতবিদ তাদের problem নাকি স্বপ্নেই solve করে ফেলতেন। ওরা স্বপ্নে বের করতেন নতুন থিওরি । আর আমি স্বপ্নে বের করি ম্যাথ এর শর্টকাট ফর্মুলা...
আমার ছোট্ট একটা ডায়েরি ছিল। মাঝে মাঝে দুই এক লাইন করে লিখতাম। বেশি লিখতাম যখন মন খারাপ থাকতো।বহুদিন পরে হঠাৎ ডায়েরিটা পড়তে গিয়ে মনে পড়ে গেলো আমার ঢাকার হোস্টেল লাইফের সেই দিনগুলো। একই সাথে অনেক আনন্দের ও কষ্টের সংমিশ্রণ ছিল সেই দিনগুলো। )
১৮/০৬/২০১১
ছোট্ট একটা রুম।
আমরা চারজন থাকি। আমি, নয়ন, তৌহিদুল আর তান ভাই। চারজনের চারটা টেবিল মুখোমুখি। চেয়ার রাখার জায়গা নাই। আমাদের বেডটাই আমাদের চেয়ার। রুম অনেক ছোট। আমি আর তৌহিদুল engineering কোচিং করছি OMECA তে। নয়ন আর তান ভাই ভার্সিটি কোচিং করছে UCC তে।
আমাদের হোস্টেলটা পূর্ব রাজাবাজার, ফার্মগেট এ। আমরা কয়েকজন স্কুল ফ্রেন্ড মিলে উঠেছি। আমি, শাকিল, সৈকত, তৌহিদ, নয়ন।
আমি, তৌহিদ, নয়ন রংপুর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে। সৈকত ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল থেকে, শাকিল রংপুর গভঃ কলেজ থেকে।
শাকিল, সৈকত অনেক দায়িত্ববান ছেলে। ওরাই ঢাকার এই হোস্টেলটা ঠিক করেছে।
১৯/০৬/২০১১
আমি অধিকাংশ সময়ই পড়ার চেষ্টা করছি।
নয়ন ফোনে কোন জানি বান্ধবীর সাথে কথা বলছে। নয়নের অনেকগুলা বান্ধবী আছে। কিন্তু একটাও ওর gf না। ওর কোনো gf নাই। নয়ন ওদেরকে খুব কমই ফোন দেয়, ওর বান্ধবীরাই ওকে বেশি ডিস্টার্ব করে। নয়ন ছেলেটা ভাল ছেলে। তবে একটু চঞ্চল টাইপের। আর পড়াশুনা করতে চায় না। ও যেন পড়াশুনা করে আন্টি এ জন্যই ওকে আমার সাথে রেখেছেন।
তৌহিদুল ঘুমাচ্ছে। ছেলেটা সারাদিনই ঘুমায়।
২০/০৬/২০১১
তান ভাই সিগারেট খাচ্ছে। তান ভাইয়ের কাজ দুইটা-
১. সিগারেট খাওয়া
২. গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলা ।
এতদিন হয়ে গেল আমি উনাকে কখনো বই নিয়ে বসতে দেখি নি। উনার কোন বই খাতা নেই। কে বলবে যে উনি admission coaching করছেন? উনার লজিক একটা- “আমার বাপের টাকা আছে তাই আমি প্রাইভেট ভার্সিটি তে পরব। আমার বাপের টাকা দিয়া আমি সিগারেট খাব, তাতে কার কি বলার আছে? ”
তাই উনি সারাদিন খান-দান, ঘুমান, gf এর সাথে কথা বলেন আর বিড়ি খান।
তবে হ্যাঁ, ওনার মনটা অনেক ভাল।
২১/০৬/২০১১
তান ভাই সিগারেটের ধোঁয়াগুলো আমার মুখের কাছে ছাড়ছে। না, আমার তেমন কোন প্রব্লেম হচ্ছে না। মাঝে মাঝে শুধু মাথাটা ঝিম ঝিম করে উঠছে। ঐটা কোন ব্যাপার না। অভ্যাস হয়ে যাবে।
২২/০৬/২০১১
আমি তান ভাইকে সিগারেট এর ব্যাপারে কিছু বলি না। কারন বলে কোন লাভ নাই। উনার বাপের টাকা দিয়া উনি সিগারেট খাবেন, তাতে আমার কি বলার আছে?
উনার বাপের টাকা দিয়া রুম ভাড়া নিয়া আমার সাথে থাকেন তাতেইবা আমার কি বলার আছে? এইতো মাত্র ৪ টা মাস। তারপর তো আর সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ার মতো কেউ থাকবে না। আর উনি তো মানুষ হিসেবে ভাল। প্রব্লেম একটাই- সিগারেট। উনার নাকি রুম এর বাইরে গিয়া সিগারেট খাইতে ভাল লাগে না।
তান ভাইয়ের উপদেশ শুনতে আমার ভালই লাগে। সব উপদেশগুলো অভিজ্ঞতালব্ধ প্রেমভালবাসা সম্পর্কিত। ভবিষ্যতে কাজে দিলেও দিতে পারে।
২৩/০৬/২০১১
নয়ন তবুও তান ভাইকে smoking এর ব্যাপারে বলে। ওর asthma র সমস্যা আছে। তবে বলে কাজ হয় না।
তৌহিদ কিছু বলে না। ওর জ্বর বা মাথাব্যাথা হলে ও নিজেই সিগারেট খায়। ওর নাকি Napa ট্যাবলেট কাজ করে না। সিগারেট খাইলে মাথাব্যাথা ভাল হয়- আগে জানতাম না।
২৪/০৬/২০১১
আমি integration এর অংক করছি। অনেক ফর্মুলা। নতুন কিছু টেকনিক শিখেছি। Integration আমি ভালই পারি।
২৫/০৬/২০১১
পলক ভাইয়া ওনার এক friend কে নিয়ে এসেছিলেন। কিছুক্ষনক গল্প করলেন। ফুচকা খাওয়ালেন। কথা বলে অনেক ভাল লাগলো।
পলক ভাইয়া আমার কাজিন। বুয়েটে পড়েন। আমি ছোট থেকেই আম্মুর মুখে ওনার কথা শুনে আসছি। ভাইয়া বলল কোন সাবজেক্ট এ পড়ার ইচ্ছা? আমি ভাব ধরে বললাম- EEE বা CSE পেলে পড়ব, না পেলে পড়ব না। মনে মনে বললাম, একটা সাবজেক্ট পাইলেই হইলো।
২৬/০৬/২০১১
জামাল ভাইয়া আমার জন্য আনারস নিয়ে এসেছেন। আমার জ্বর শুনে আদ্ভুত ভালো এই মানুষটা মোহাম্মদপুর থেকে ছুটে এসেছেন। উনি বললেন যে কোন সমস্যা হলেই উনাকে ফোন দিতে।
আমি জামাল ভাইয়াকে কোন সমস্যার কথা বললাম না। জামাল ভাইকে কাছে পেয়ে মনে একটা সাহস পেলাম- আমি ঢাকায় একা নই।
২৭/০৬/২০১১
ঢাকায় এসে এই প্রথম জ্বর এসেছে। জ্বরে আমার তেমন কোনো খারাপ লাগছে না। আম্মু আনারস খেতে বলেছে। ফার্মগেটের আনারস ডেইলি খাচ্ছি আর দিব্যি কোচিং করছি।
বুয়েটের ভাইয়াদের দেখতে ভালো লাগে, তাদের কথা শুনতে ভাল লাগে। তাদের নেয়া ক্লাসগুলোও অসাধারন লাগে। এক এক ভাই এক এক রকম। দেখলেই ব্রিলিয়ান্ট মনে হয়।
২৮/০৬/২০১১
ইদানিং আমি ঘুমের মধ্যে স্বপ্নেও ম্যাথ করা শুরু করেছি। স্বপ্নে দেখি কোন ভাই জানি আমাকে শর্টকাট শিখাইতেছেন। মানুষ দিনে যা করে রাতে তাই নাকি স্বপ্ন হিসেবে দেখে।
অনেক গনিতবিদ তাদের problem নাকি স্বপ্নেই solve করে ফেলতেন। ওরা স্বপ্নে বের করতেন নতুন থিওরি । আর আমি স্বপ্নে বের করি ম্যাথ এর শর্টকাট ফর্মুলা...